প্রকাশিত: ১৯/০৯/২০১৬ ৭:৩২ এএম
ফাইল ছবি

নিউজ ডেস্ক::

প্রায় এক বছর আগে দেওয়া শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার লিখিত আদেশ পেল শিক্ষাবোর্ডগুলো। আর সেই আদেশে আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় আসছে নতুনত্ব। সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে ১০ নম্বর বাড়িয়ে ৭০ ও বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্রে ১০ নম্বর কমিয়ে ৩০ করা হয়েছে। মোট তিন ঘণ্টার পরীক্ষায় থাকবে না কোনো বিরতি। গত বছরের ৭ অক্টোবর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, শিক্ষা পদ্ধতি মূল্যায়ন কমিটির সদস্য, ঢাকার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের উপসি’তিতে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা একটি অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের উত্তর দিতে চায় না বলে মানববন্ধন ও মিছিলসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি
পালন করেছিল। অবশেষে সম্প্রতি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড থেকে নতুন মানবন্টন ও প্রশ্নের ধরন সম্পর্কিত একটি নির্দেশনা পায় বোর্ডগুলো।
কি আছে সেই নির্দেশনায় এমন প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান বলেন, ‘নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্বের ৬০ নম্বরের সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের পরীক্ষা হবে ৭০ নম্বরের এবং বহুনির্বাচনী ৪০ নম্বরের প্রশ্নপত্রের পরিবর্তে পরীক্ষা হবে ৩০ নম্বরের।’
তাহলে সময় বন্টন কেমন হবে জানতে চাইলে মাহবুব হাসান বলেন, ‘পরীক্ষা শুরুর ১০ মিনিট আগে পরিদর্শকরা সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের উত্তর লেখার জন্য উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্রের উত্তর দেয়ার জন্য ওএমআর শিট সরবরাহ করবে। এই সময়ের মধ্যে পরীক্ষার্থীরা উভয় উত্তরপত্রে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ পরিচিতিমূলক তথ্যগুলোর বৃত্ত ভরাট করবে। পরীক্ষা শুরুর প্রথমে সরবরাহ করা হবে বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র, ৩০ মিনিট শেষ হওয়ার সাথে সাথে পরিদর্শকরা একদিকে ওএমআর শিট গ্রহণ করবে ও অপরদিকে সৃজনশীল প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে বিতরণ করবে। ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট পর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সৃজনশীলের উত্তরপত্র সংগ্রহ করা হবে।’
এদিকে ব্যবহারিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে জানা যায়, ৫০ নম্বরের সৃজনশীল প্রশ্ন ও ২৫ নম্বরের বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র হবে। পরীক্ষা পদ্ধতিতে আগে বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্রের ২৫ নম্বরের পরীক্ষা ২৫ মিনিটে শেষ হওয়ার পর শুরু হবে সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের ৫০ নম্বরের পরীক্ষা। ৭০ নম্বরের সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে ১১টি প্রশ্ন থেকে উত্তর করতে হবে ৭টি এবং ৫০ নম্বরের সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের পরীক্ষায় ৮টি প্রশ্ন থেকে উত্তর করতে হবে ৫টি।
গত বছরের অক্টোবরে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর প্রায় এক বছর পর এই নির্দেশনা কেন এলো এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (মাধ্যমিক-২) বেগম রুহী রহমান বলেন, ‘সিদ্ধান্ত আগেই নেয়া হয়েছিল, শুধু বাকি ছিল পরীক্ষা পদ্ধতি ও প্রশ্নপত্র পদ্ধতি কেমন হবে সেই বিষয়ে নির্দেশনা দেয়ার। আমরা এনসিটিবি, বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, সব বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কর্মশালার ভিত্তিতে বিষয়ওয়ারী প্রশ্নের ধরন ও মানবন্টন চূড়ান্ত করেছি। সবকিছু শেষ করতে দেরি হয়েছে বলে তা প্রকাশ করতেও বিলম্ব হয়েছে।
এতে কি স্কুল ও কলেজগুলোতে আসন্ন নির্বাচনী পরীক্ষায় এই পদ্ধতিতে প্রশ্ন করতে হবে এমন প্রশ্ন করা হলে বেগম রুহী রহমান বলেন, অবশ্যই। এই পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে নির্বাচনী পরীক্ষা নিতে হবে। আর সব বিষয়ের প্রশ্নের ধরন বোর্ডগুলো তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ওয়েবসাইটেও পাওয়া যাবে।
কিন’ একটি সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বাড়তি উত্তর করার প্রতিবাদ করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করেছিল। এখন কি আবারো আন্দোলন হবে না? এমন প্রশ্ন করা হলে বেগম রুহী রহমান বলেন, ‘শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সবার উপসি’তিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর এতে মোট সময়ের তো কোনো হেরফের হচ্ছে না। তাই আন্দোলনেরও কিছু নেই।’
তবে অনিয়মিত পরীক্ষার্থীরা পূর্ববর্তী নিয়মে পরীক্ষা দেবে জানিয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান বলেন, ‘শুধুমাত্র নিয়মিত পরীক্ষার্থীরা ৭০ ও ৩০ নম্বরের পরীক্ষা দেবে। আর অনিয়মিত পরীক্ষার্থীরা সৃজনশীল ৬০ ও বহুনির্বাচনীতে ৪০ নম্বরের পরীক্ষা দেবে। আর তাদের পরীক্ষাতে ১০ মিনিট বিরতি থাকবে। প্রথম ৪০ মিনিট পর ওএমআর শিট তুলে নেয়া হবে। সৃজনশীলের উত্তরপত্র বিতরণ করা হবে এবং ১০ মিনিট পর প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে এবং ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট পর উত্তরপত্র তুলে নেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে নম্বর বাড়িয়ে বহুনির্বাচনীতে নম্বর কমানোর প্রস্তাব উঠে আসছে। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়।

পাঠকের মতামত

যে কারনে মামলার মুখে পড়তে পারে ইউনিয়ন ব্যাংক

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ‘নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্ট’ এ মামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট ...